ডেস্ক রিপোর্টঃ সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক স্বীকার করেছেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত গণঅভ্যুত্থানের সময় সারাদেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করা হয়েছিল। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কাছে এই তথ্য দিয়েছেন।
গণঅভ্যুত্থানের সময় ইন্টারনেট বন্ধের কারণ বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) একদিনের জিজ্ঞাসাবাদে পলক জানান, ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করার মূল উদ্দেশ্য ছিল আন্দোলনের সময় ঘটে যাওয়া গণহত্যার তথ্য বিশ্বের কাছে আড়াল করা। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায়, দেশে চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং গণহত্যার ঘটনা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ইন্টারনেট সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছিল।”
আইসিটি তদন্ত সংস্থার জিজ্ঞাসাবার এই স্বীকারোক্তির পর, বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, “জিজ্ঞাসাবাদে পলক এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন, যা তদন্তে সহায়ক হতে পারে।” তিনি আরও বলেন, গণহত্যার তথ্য বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া থেকে বিরত রাখতে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
ইন্টারনেট বন্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, এটি একটি সাময়িক ব্যবস্থা ছিল যা নিরাপত্তা এবং সামাজিক অস্থিরতা মোকাবিলায় নেওয়া হয়েছিল। তবে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো এবং প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা এর প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেন, ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে মানুষের মৌলিক অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং শিক্ষা, ব্যবসা ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্যবসায়ী মহলের প্রতিক্রিয়া অনেকে অভিযোগ করেছেন যে, দীর্ঘদিন ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও ব্যবসায়ীদের কর্মকা- বিঘ্নিত হয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা অনলাইন শিক্ষার ওপর নির্ভরশীল থাকায় তাদের অনেকেই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সমস্যার সম্মুখীন হন।
এ ঘটনার পর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, ভবিষ্যতে আরও সুসংগঠিত এবং কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যাতে নিরাপত্তা এবং জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়। তবে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলমান রয়েছে।