জেলা প্রতিনিধি।
আজ আমার বাবার মৃত্যু বার্ষিকী। ১৯৮৬ সালের ঠিক এমন একটি দিনে ভোর ৫ টায় বাবাকে হারাতে হয়েছে।
বাবা শুধু একজন মানুষ নন, স্রেফ একটি সম্পর্কের নাম নয়। বাবার মধ্যে জড়িয়ে আছে বিশালত্বের এক অদ্ভুত মায়াবী প্রকাশ। বাবা নামটা উচ্চারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যেকোনো বয়সী সন্তানের হৃদয়ে শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা আর ভালোবাসার এক অনুভব জাগে। বাবার ছায়া শেষ বিকেলের বটগাছের ছায়ার চেয়েও বড়। যিনি তাঁর সন্তানকে জীবনের সব উত্তাপ থেকে সামলে রাখেন।
পৃথিবীতে যাঁর বাবা নেই সে-ই বোঝে বাবার ভালোবাসা তার জন্য কতটা প্রয়োজন। মাঝিবিহীন নৌকা যেমন চালানো যায় না, তেমনি বাবা ছাড়া নিজের জীবনকে সামনে এগিয়ে নেওয়া অনেক কষ্টকর।
আমার বাবা নেই। ১৯৮৬ সালে বাবা না–ফেরার দেশে চলে গেছেন। আমার বয়স যখন সবে ৬ বছর,তখন বাবাকে হারাই। এরপর স্কুলে ভর্তি হই। স্কুলে প্রতিদিনই আমার মন খারাপ হয়ে যেত। আমার সহপাঠীরা স্কুলে আসত তাদের বাবাদের সঙ্গে। বাবারা ছেলেদের আদর করত আর আমি তাকিয়ে দেখতাম। নিজেই নিজেকে বলতাম আমার বাবা যদি বেঁচে থাকতেন, তাহলে আমাকেও স্কুলে নিয়ে যেতেন, আমাকেও অনেক আদর করতেন। বাবার আদর এবং শাসন কোনোটিই পাইনি। এই অভাববোধ আমার জীবনে রয়েই যাবে।
বাবার মৃত্যুর পর প্রায় ৩৮ টি বছর অতিক্রম হয়ে গেছে৷ অনেক কিছুই পাল্টে গেছে। আমার পড়াশোনাও শেষ। বিয়ে করে ছেলে মেয়ের বাবা হয়ে গেছি,তাহা যদি বাবা জানতেন তাহলে বাবা কতই–না খুশি হতেন! হয়তো খুশিতে আমাকে একবার জড়িয়ে ধরতে চাইতেন! যদিও এখন এটা কখনো সম্ভব হবে না।
কখনো বাবাকে বলা হয়নি, ‘তোমাকে অনেক ভালোবাসি, বাবা।’ এখনো ঘুমের মধ্যে বাবাকে স্বপ্নে দেখি। আশপাশের সবকিছুতেই যেন বাবার অস্তিত্ব খুঁজে পাই। মনে হয় বাবা আমার সঙ্গেই আছেন। মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করি তিনি যেন ওপারে আমার বাবাকে ভালো রাখেন।
ভালোবাসি বাবাকে।আামার বাবাসহ পৃথিবীর সব বাবাকেই জানাই অন্তরের অন্তস্তল থেকে শ্রদ্ধা, শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।
রাব্বির হাম-হুমা কামা রাব্বা ইয়ানি ছাগিরা।”