হানিফ পারভেজ,বড়লেখা(মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি।
মৌলভীবাজারের বড়লেখার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের কুমারশাইল গ্রামের মো. সাঈদ আফ্রিদি (১৯)-কে ঢাকায় পাওয়া গেছে।
সোমবার বিকেলে ঢাকার গাবতলি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে রাতে বিমানে করে সিলেটে আনা হয়েছে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গতকাল রোববার আফ্রিদি নিখোঁজ হয়। তাকে না পেয়ে স্বজনরা চরম দুশ্চিন্তায় ছিলেন। তার নিখোঁজের সংবাদ ফেসবুকে পোস্ট করা হলে মূহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে সোমবার দুপুরে থানায় জিডি করা হয়।
সাঈদ উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের কুমারশাইল এলাকার বাসিন্দা ইসাক আলীর ছোট ছেলে এবং শাহবাজপুর বাজারের ইলিয়াছ অ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিক ইলিয়াস আলীর ভাতিজা।
পরিবার জানায়, আফ্রিদি গতকাল রোববার (১০ নভেম্বর) সকাল ১১টায় বড়লেখা শহরে তার খালার বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু সে খালার বাসায়ও পৌঁছায়নি। তার সাথে থাকা মুঠোফোনও বন্ধ হয়ে যায়। স্বজনরা তাকে বিভিন্নস্থানে খোঁজ করেও পাচ্ছিলেন না। আজ সোমবার (১১ নভেম্বর) বিকেল তিনটায় তার মুঠোফোনটি চালু হয়। তখন আফ্রিদিকে কল করা হলে ফোন রিসিভ করে জানায়, সে ঢাকার গাবতলিতে বাসে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছে। পরে স্বজনরা বাসের সুপারভাইজারের সঙ্গে কথা বলে তাকে গাবতলি শ্যামলী বাস কাউন্টারে নামিয়ে দিতে অনুরোধ করেন। পরে সুপারভাইজার তাকে গাবতলি শ্যামলী বাস কাউন্টারে নামিয়ে দেন। সেখান থেকে পরিচিত এক ব্যক্তির মাধ্যমে আফ্রিদিকে গাবতলি কাউন্টার থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে বিমানের একটি ফ্লাইটে রাত সাড়ে নয়টার দিকে সে সিলেট শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দেরে এসে পৌঁছায়। সেখান থেকে তাকে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
সাঈদ আফ্রিদির বরাত দিয়ে তার এক আত্মীয় জানান, সাঈদ আফ্রিদি সুস্থ হলেও সে এখনও অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছে। তার বিশ্রামের দরকার। সে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে-গতকাল রোববার সিএনজি চালিত অটোরিকশায় উঠে শাহবাজপুর থেকে বড়লেখা যায়। পরে বড়লেখা থেকে সে মৌলভীবাজার গিয়ে পৌঁছায়। সেখান থেকে সে বাসে চট্টগ্রামে চলে যায়। চট্টগ্রামে রাত কাটিয়ে সকালে সে আবার ঢাকায় আসে। নিখোঁজের পর থেকে তার ফোন বন্ধ ছিল। বিকেলে হঠাৎ ফোন চালু করে। তখন তাকে ফোন দিলে সে জানায়, সে ঢাকায় গাবতলিতে বাসে আছে। বাড়িতে আসছে। তখন বাসের সুপারভাইজারের সঙ্গে কথা বললে তিনি তাকে গাবতলি শ্যামলী বাস কাউন্টারে নামিয়ে দেন। পরে পরিচিত একজনের মাধ্যমে তাকে উদ্ধার করা হয়। পরে বিমানের টিকেট কেটে তাকে ঢাকা বিমানবন্দরে পৌঁছে দেওয়া হয়। সেখান থেকে বিমানে করে সিলেট আনা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, নিখোঁজের পর সাঈদের বাবাকে ফোন দিয়ে একটি নাম্বার থেকে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে। পুলিশ খুব আন্তরিকতার সাথে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে।
সাঈদের বাবা ইসাক আলী বলেন, সাঈদ নিখোঁজের পর অনেকে তাকে খোঁজাখুঁজি করেছেন। আমাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। সে নিখোঁজের পর থেকে উদ্ধার হওয়া পর্যন্ত যারা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন তিনি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি পুলিশের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
বড়লেখ থানার ওসি মো. আবদুল কাইয়ূম সোমবার রাত ১১টায় বলেন, কুমারশাইল গ্রাম থেকে মো. সাঈদ আফ্রিদি নামে এক ছেলে নিখোঁজ হয়েছিল। তাকে ঢাকায় পাওয়া গেছে। সে এখন স্বজনদের কাছে আছে।