DSF NEWS ডেস্ক রিপোর্টরঃ পৈত্রিক সম্পত্তি দখলের অভিযোগে যুক্তরাজ্য প্রবাসী ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে বড় ভাইকে বাড়ি ছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে। রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের নাম ব্যবহার করে ভয়ভীতি, জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেওয়া, পানি-বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নসহ অমা/নবিক নির্যা/তনের শিকার হওয়ার দাবি করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। এসব অভিযোগ তুলে ধরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী বৃদ্ধ মঈন উদ্দীন (ছালিক মিয়া)।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মঈন উদ্দীনের মেয়ে পাপিয়া সুলতানা রিমা।
লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ইলাশপুর গ্রামের বাসিন্দা মঈন উদ্দীন (ছালিক মিয়া) তিন ভাই ও চার বোনের মধ্যে সবার বড়। পরিবারের হাল ধরতে তিনি ১৯৭৬ সালে দুবাই প্রবাসে যান। প্রবাস জীবনে থেকেই চার বোনের বিয়ে, বাবা-মায়ের ভরণপোষণসহ পরিবারের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করেন। তার ছোট ভাই আব্দুল হক বর্তমানে যুক্তরাজ্য (লন্ডন) প্রবাসী। এক সময় তাকেও দুবাইয়ে নিয়ে যান মঈন উদ্দীন। পরে দেশে ফিরে আব্দুল হকের বিয়ের যাবতীয় খরচ বহন করেন তিনি। বিয়েতে কাবিনে দেওয়া ১০ কেয়ার (প্রায় ৩০০ শতক) জমি ও ২৫ ভরি স্বর্ণও তার প্রবাসে অর্জিত অর্থে কেনা বলে দাবি করেন তিনি।
মঈন উদ্দীন অভিযোগ করে বলেন, ২০০৭ সালে আমি প্রবাস থেকে পাঠানো অর্থে পৈত্রিক জায়গার ওপর বসতঘর নির্মাণ করি। কিন্তু পরবর্তীতে সম্পত্তির লোভে আমার ছোট ভাই আমাকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে।
তিনি আরও বলেন, ২০০৩-২০০৪ সালের দিকে আব্দুল হক তাকে ও তার বাবা-মাকে লন্ডনে নেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন ডকুমেন্ট তৈরির নামে একাধিক জায়গায় নিয়ে যান এবং কৌশলে তাদের স্বাক্ষর নেন। সেই স্বাক্ষরগুলো কী কাজে ব্যবহার করা হয়েছে তা আজও তিনি জানেন না। ২০০৬ সালে আব্দুল হক বাবা-মাকে লন্ডনে নিয়ে যান। এরপর ধীরে ধীরে বাড়িতে তার কোনো অধিকার নেই বলে দাবি করতে থাকেন এবং এক পর্যায়ে নির্যাতন শুরু করেন। সামাজিক সম্মান ও পারিবারিক মর্যাদার কথা ভেবে দীর্ঘদিন বিষয়টি চেপে গেলেও একাধিকবার পারিবারিকভাবে সালিশ হলেও কোনো সমাধান হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ৪নং উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড সভাপতি মো. নজরুল ইসলামকে ব্যবহার করে ইউনিয়ন পরিষদের নামে তাদের জমি দান দেখানো হয়েছে। দানকৃত জমিটি মঈন উদ্দীনের কষ্টার্জিত অর্থে কেনা হলেও জোরপূর্বক তার স্বাক্ষর নেওয়া হয়।
বর্তমানে আব্দুল হকের নির্দেশে বাড়ির পানি মটর ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এমনকি পুকুরের পানিও ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি। এসব নির্যাতনের কারণে পরিবারসহ মোগলাবাজারে একটি ভাড়া বাসায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।
মঈন উদ্দীন বলেন, ‘সারাজীবন প্রবাসে কাটিয়ে আজ বৃদ্ধ বয়সে আমি নিঃস্ব। জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি।’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, ছোট ভাই রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে তাকে হুমকি দিচ্ছেন। আসন্ন সময়ে দেশে এসে বিএনপির এক এমপি প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন বলেও ভয় দেখানো হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবার প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও ন্যায়বিচার কামনা করেন।

