পুরান ঢাকার লালবাগ থানাধীন আরএনডি রোডের সোনালী ব্যাংক সংলগ্ন জমজম মদিনা টাওয়ারের ষষ্ঠ তলায় একটি ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ব্যক্তি নজরুল ইসলাম (৪০), একজন ব্যাংক কর্মকর্তা, যিনি খুলনার আরংঘাটা থানার তেলিগাতী এলাকার মৃত নবাব আলীর পুত্র। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এই নৃশংস ঘটনাটি সংঘটিত হওয়ার পর রাতে লালবাগ থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
নিহতের বড় ভাই নুরুল ইসলামের অভিযোগ, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তিনি জানান, নজরুল ইসলাম লালবাগে একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। ঢাকায় বদলির পর তিনি স্ত্রী শারমিন ওরফে নোভা, দুই সন্তান ও শাশুড়ির সঙ্গে ওই ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন। তিন মাস পূর্বে নজরুলের মা ওই বাসায় এসে থাকা শুরু করেন, যা নিয়ে পারিবারিক কলহের সূত্রপাত হয়। নুরুল দাবি করেন, শুক্রবার বিকেলে নজরুলের স্ত্রী শারমিন তার রুমে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে ধারালো বঁটি দিয়ে নজরুলের ওপর আক্রমণ করেন। গুরুতর আহত নজরুল কোনোক্রমে দরজা খুলে মায়ের কাছে সাহায্য চাইতে গেলে তার গলা ও দুই হাতে একাধিক কোপের চিহ্ন স্পষ্ট হয়।
নুরুল ইসলাম আরও অভিযোগ করেন, এই হত্যাকাণ্ডে নজরুলের শাশুড়িরও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তিনি এটিকে একটি সুনির্দিষ্ট ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, পারিবারিক বিবাদকে কেন্দ্র করে এই নৃশংসতা সংঘটিত হয়েছে।
লালবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দেবাশীষ জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে পারিবারিক কলহকে এই হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঘটনার পর নিহতের স্ত্রী শারমিন ও শাশুড়ি পলাতক রয়েছেন। মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এই ঘটনা পুরান ঢাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের পেছনের পূর্ণাঙ্গ রহস্য উন্মোচনের জন্য তদন্ত ত্বরান্বিত করেছে।