ডিএসএফ রিপোর্ট: ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠী “আনসার উল্লাহ” মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের তেল আবিব সফরের সময় ইসরায়েলের তেল আবিব শহরে হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল এবং অস্ত্রবহনকারী ড্রোন হামলা চালিয়েছে। হামলাটি ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শনিবার ভোরে তেল আবিবের জাফা এলাকায় সংঘটিত হয়, যা ইসরায়েলের অর্থনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু। হুথিরা দাবি করেছে, এটি “গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে” চালানো হয়েছে এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরকে “স্বাগত” জানানোর উদ্দেশ্যে।
হুথি সামরিক কার্যক্রমের কথামানা ইয়াহিয়া সারিয়া-র বক্তব্যে বলা হয়েছে, “ইয়েমেনের মিসাইল বাহিনী ‘প্যালেস্টাইন-২’ হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল ব্যবহার করে জাফা (তেল আবিব) এলাকার কয়েকটি সংবেদনশীল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। এই অপারেশন সফলভাবে তার উদ্দেশ্য অর্জন করেছে।” হামলায় একাধিক ওয়ারহেডযুক্ত মিসাইল এবং ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা মিসাইলটি ইসরায়েলি আকাশসীমার বাইরে আটকিয়েছে, কিন্তু আকাশসীমান্তরে সাইরেন বাজিয়ে জনগণকে আশ্রয়স্থলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
হামলার সময় তেল আবিবের জাফা এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় এবং কয়েকটি ভবনের জানালা ভেঙে পড়ে। প্রাথমিক প্রতিবেদনে কোনো মৃত্যুর খবর নেই, তবে কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘আরো’ এবং ‘ডেভিড’ স্লিঙ্গ’ মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম মোতায়েন করে হামলা প্রতিহত করেছে। এই হামলা গাজা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে হুথিদের ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পঞ্চম পর্যায়ের অভিযানের অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের তেল আবিব সফরটি গাজা যুদ্ধে শান্তি প্রক্রিয়া এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনার জন্য। তিনি ইসরায়েলি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন যখন হামলাটি সংঘটিত হয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই হামলাকে “আতঙ্কবাদী কর্মকাণ্ড” বলে অভিহিত করে এবং ইসরায়েলের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যুক্তরাষ্ট্র এই অপ্রয়োজনীয় হামলার নিন্দা করে এবং ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার সমর্থন করে।”
হুথিরা গত অক্টোবর থেকে গাজা যুদ্ধের সমর্থনে ইসরায়েল এবং লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হামলা চালিয়ে আসছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র এবং মিত্ররাষ্ট্রগুলো ইয়েমেনে বারবার বিমান হামলা চালিয়েছে। এই সর্বশেষ হামলা আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে বৃহত্তর যুদ্ধের আশঙ্কা জাগিয়েছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহুর অফিস জানিয়েছে, এর জবাবে ইয়েমেনের হুথি লক্ষ্যবস্তুতে প্রতিশোধমূলক হামলা চালানো হবে।