আন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত: সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, আইসিটি আইনেও সংশোধনী অনুমোদন
ঢাকা, ১০ মে ২০২৫ — দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন মোড়: অন্তর্বর্তী সরকার শনিবার রাতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহম্মদ ইউনূসের সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’-তে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সরকার জানায়, পরবর্তী কার্যদিবসে এ সংক্রান্ত সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
বৈঠক শেষে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এক বিবৃতি পাঠ করে জানান, একইসাথে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনীর অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে। সংশোধনী অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এখন থেকে কোনো রাজনৈতিক দল বা তার সহযোগী সংগঠন এবং সমর্থক গোষ্ঠীকে বিচারের আওতায় আনতে পারবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আওয়ামী লীগ ও তার শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে বিচার চলমান থাকা অবস্থায় দেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও “জুলাই আন্দোলনের” নেতাকর্মী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার স্বার্থে দলটির সকল কার্যক্রম (অনলাইনসহ) নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এছাড়া, “জুলাই ঘোষণাপত্র” আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্তভাবে প্রকাশ করার সিদ্ধান্তও সভায় গৃহীত হয়েছে।
২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঘিরে সংঘটিত শাহবাগ আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে বিবৃতিতে বলা হয়, তখনকার সরকার (আওয়ামী লীগ) সেই আন্দোলনকে সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে স্বৈরাচারী প্রবণতা প্রকাশ করেছিল। “শাহবাগে ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি” শিরোনামে প্রকাশিত দৈনিক আমার দেশের প্রতিবেদন ছিল সেই সময়ের একটি ব্যতিক্রমী সাংবাদিকতা উদ্যোগ, যা তৎকালীন সরকারের রোষানলে পড়ে।
পরিশেষে উপদেষ্টা পরিষদ জানায়, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের গণতন্ত্র, বিচার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।