হারিয়েট টাবম্যান: স্বাধীনতার অগ্নিশিখা

হারিয়েট টাবম্যান: স্বাধীনতার অগ্নিশিখা হারিয়েট টাবম্যান দিবস প্রতি বছর ১০ই মার্চ পালিত হয়, যা দাসপ্রথার বিরুদ্ধে

হারিয়েট টাবম্যান: স্বাধীনতার অগ্নিশিখা | দাসপ্রথা বিরোধী সংগ্রামের প্রতীক

হারিয়েট টাবম্যান: স্বাধীনতার অগ্নিশিখা

হারিয়েট টাবম্যান দিবস প্রতি বছর ১০ই মার্চ পালিত হয়, যা দাসপ্রথার বিরুদ্ধে সংগ্রাম, মানবাধিকারের জন্য লড়াই এবং নারী ক্ষমতায়নের এক উজ্জ্বল প্রতীক। তিনি ছিলেন এক অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধা, যিনি শত শত দাসকে মুক্তির পথ দেখিয়েছেন এবং আমেরিকার ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

হারিয়েট টাবম্যানের জীবন কাহিনি

শৈশব ও জন্ম

১৮২২ সালের মার্চ মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড রাজ্যে জন্মগ্রহণ করেন হারিয়েট টাবম্যান। তাঁর আসল নাম ছিল অ্যারামিন্তা “মিন্টি” রস। তাঁর বাবা-মা দুজনেই দাস ছিলেন, ফলে ছোটবেলা থেকেই তাঁকে দাসত্বের নির্মম বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয়েছে।

শিক্ষা জীবন

সেসময় দাসদের জন্য কোনো আনুষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ ছিল না, তাই হারিয়েট কখনোই বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। তবে তিনি জীবন থেকেই শিক্ষা গ্রহণ করেন, কঠোর পরিশ্রম ও বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে নিজের জ্ঞান অর্জন করেন।

বিবাহ ও পরিবার

১৮৪৪ সালে তিনি জন টাবম্যান নামের এক মুক্ত কৃষ্ণাঙ্গকে বিয়ে করেন এবং বিয়ের পর নিজের নাম পরিবর্তন করে হারিয়েট টাবম্যান রাখেন। পরবর্তীতে তিনি নেলসন ডেভিস নামের আরেকজনকে বিয়ে করেন এবং গার্টি নামে এক কন্যা সন্তান দত্তক নেন।

হারিয়েট টাবম্যান: স্বাধীনতার অগ্নিশিখা | দাসপ্রথা বিরোধী সংগ্রামের প্রতীক
হারিয়েট টাবম্যান ছিলেন দাসপ্রথা বিরোধী আন্দোলনের এক মহীয়সী নারী, যিনি শত শত দাসকে মুক্ত করেছেন। জানুন তাঁর জীবন, সংগ্রাম ও অবদান সম্পর্কে।

কর্মজীবন ও অবদান

দাসত্ব থেকে মুক্তি ও ‘আন্ডারগ্রাউন্ড রেলরোড’

১৮৪৯ সালে নিজের জীবন বাজি রেখে দাসত্ব থেকে পালান হারিয়েট টাবম্যান। এরপর তিনি শত শত দাসকে মুক্ত করতে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড রেলরোড’ নামক গোপন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তাঁদের মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। তাঁর এই অসামান্য অবদানের জন্য তিনি পরিচিত হন ‘মোসেস’ নামে।

আমেরিকার গৃহযুদ্ধগুপ্তচর জীবন

গৃহযুদ্ধের সময় তিনি ইউনিয়ন আর্মির জন্য গুপ্তচর, নার্স ও রান্নার কাজ করতেন। তিনি দক্ষিণ অঞ্চলে গোপন মিশন পরিচালনা করেন এবং বহু দাসকে মুক্ত করতে সাহায্য করেন।

নারী ও মানবাধিকার আন্দোলন

গৃহযুদ্ধের পর তিনি নারীর ভোটাধিকার এবং আফ্রিকান-আমেরিকানদের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করেন। তাঁর সাহসিকতা ও আত্মত্যাগ মানবাধিকারের লড়াইয়ে তাঁকে এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে পরিণত করেছে।

হারিয়েট টাবম্যান দিবস কেন গুরুত্বপূর্ণ?

১. দাসপ্রথার বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রতীক

তিনি শুধু নিজের মুক্তির জন্য লড়েননি, বরং শত শত নির্যাতিত মানুষকে মুক্ত করেছেন।

২. স্বাধীনতার প্রতীক

তিনি মুক্তি, স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের জন্য আজও এক অনুপ্রেরণার নাম।

৩. নারী ও মানবাধিকারের অগ্রদূত

তিনি নারীদের অধিকার ও মানবাধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছেন, যা আজও আমাদের জন্য শিক্ষণীয়। হারিয়েট টাবম্যান: স্বাধীনতার অগ্নিশিখা। দাসপ্রথা বিরোধী সংগ্রামের প্রতীক

উপসংহার

হারিয়েট টাবম্যান দিবস শুধুমাত্র একটি স্মরণীয় দিন নয়, এটি এক মহীয়সী নারীর সাহস, সংগ্রাম ও মানবাধিকারের প্রতি অবিচল বিশ্বাসের উদযাপন। তাঁর জীবন আমাদের শেখায়, প্রতিকূলতাকে জয় করে কীভাবে সত্যিকার অর্থে মুক্তির পথে এগিয়ে যেতে হয়। তাই ১০ই মার্চ, আমরা কেবল তাঁকে স্মরণ করি না, বরং তাঁর আদর্শকে লালন করি। হারিয়েট টাবম্যান: স্বাধীনতার অগ্নিশিখা | দাসপ্রথা বিরোধী সংগ্রামের প্রতীক

Facebook
Reddit
Pinterest
Twitter
LinkedIn
Telegram
Email
Print

ADS

adsadsads
ADVERTISEMENT

Related Posts